ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাতে অর্থ না থাকায় নির্বাচন কমিশনকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার জন্য ২ হাজার কোটি টাকা দিতে পারছে না অর্থ মন্ত্রণালয়।
গত ৩১ অক্টোবর ‘নির্বাচন ব্যবস্থায় তথ্য-প্রযুক্তি প্রয়োগের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার’ শীর্ষক প্রকল্পটির অর্থায়ন বিষয়ে এক চিঠিতে নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগ। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
উপ সচিব মো. আব্দুল ছামাদ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, অর্থ বিভাগ থেকে কোনো বিশেষ প্রকল্পের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার রেওয়াজ নেই। তবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা কমিশনের কম বাস্তবায়নযোগ্য কোনো উন্নয়ন প্রকল্প থেকে আপাতত এ অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে ওই চিঠিতে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে ইসি আসন্ন নির্বাচনে ইভিএম কেনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত থেকে জরুরি ভিত্তিতে ২০০০ কোটি বরাদ্দ চায়। ইভিএম কেনা প্রকল্পে দেড় লাখ ইভিএম কেনার ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অর্থ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে- সাধারণত অর্থ বিভাগ থেকে কার্যক্রম বিভাগকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)/সংশোধিত এডিপির (আরএডিপি) সম্পদের আকার নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তবে কার্যক্রম বিভাগ ওই সম্পদ সীমার মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়। রাজস্ব খাতের আওতায় জরুরি প্রয়োজনে নির্বাহ করার জন্য অর্থ বিভাগে ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাতে সীমিত পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ থাকে। চলতি অর্থ বছরে এ খাতের বরাদ্দ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ অবশিষ্ট নেই। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাতের বরাদ্দ ছিল ২০০০ কোটি টাকা। যা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ছোট খাটো আর্থিক দাবি পূরণ করতে প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, চলতি অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত কম বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পন্ন প্রকল্প থেকে ইভিএম প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি বিবেচনা করা যায়। চলতি আরএডিপি’র সম্পদের আকার নির্ধারণের ক্ষেত্রে উক্ত পুনঃউপযোজনের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত অর্থ সমন্বয়যোগ্য।
আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচনী আইন সংশোধনে প্রস্তাব পাঠানোর পাশাপাশি ইভিএম ব্যবহারের প্রকল্পটিও গত ১৮ সেপ্টেম্বর অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি।
ওই সময় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, ত্রুটিমুক্ত, বিশ্বাসযোগ্য ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর করতে দেড় লাখ ইভিএম কেনা হবে। এ প্রকল্পে দেড় লাখ ইভিএম মেশিন কিনতে ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ চলতি সময় থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে হলেও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সংসদ নির্বাচনে এখনি ইভিএম-এ ভোটগ্রহণের বিরোধীতা করছে।
ইসি জানিয়েছে দেড় লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন তিন ধাপে কেনা হবে। চলতি অর্থবছরে ৫০ হাজার মেশিন কেনা হতে পারে। প্রতিটি ইভিএমের কন্ট্রোল ইউনিটের সঙ্গে দুটি করে ব্যালট ইউনিট কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। মেশিনের ওয়ারেন্টি ১০ বছর পাওয়া যাবে।
২০১১ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার শুরু করেন তৎকালীন ড. শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। তবে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন এ মেশিন ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। বর্তমান সিইসি নূরুল হুদার কমিশন পুনরায় নির্বাচনে ইভিএম মেশিন ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়। এসব মেশিনের গুণগত ও কারিগরি দিক উন্নয়ন করা হয়েছে। এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এ ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি সংযোজন করে সংশোধনীও আনা হয়েছে, যা সম্প্রতি কেবিনেটে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে।
Ryan Haywood
3 minutes ago
Relax my friend
Gavino Free
3 minutes ago
Ok, cool.